Header Ads

Header ADS

রাহুলের-হাতে-গড়কড়ির-অস্ত্র || Huge-arms-of-Rahul-in-the-hands-of-Rahul ||News BD Zones

রাহুলের-হাতে-গড়কড়ির-অস্ত্র || Huge-arms-of-Rahul-in-the-hands-of-Rahul ||News BD Zones

 রাহুল গান্ধী। ছবি: রয়টার্স
  

নিজের অজান্তেই কংগ্রেসের হাতে মারাত্মক অস্ত্র তুলে দিয়েছেন ভারেতে ক্ষমতাসীন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ি। সেই অস্ত্রে শাণ দিয়ে নতুন উদ্যমে বিজেপিকে আক্রমণ হানলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। আজ মঙ্গলবার সকালে কংগ্রেস সংসদীয় দলের বৈঠকে যে আট দফা দাবিতে দেশজোড়া আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক তিনি দিয়েছেন, তার প্রথমেই রয়েছে গড়কড়ির তুলে দেওয়া অস্ত্র বেকারত্ব।

কী বলেছিলেন মহারাষ্ট্রের নেতা নিতিন গড়কড়ি? ওই রাজ্যে সংরক্ষণের দাবিতে মারাঠাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি গত রোববার বলেছিলেন, ‘সংরক্ষণ না হয় দেওয়া গেল। কিন্তু চাকরিটা কোথায়? তথ্যপ্রযুক্তির দরুন ব্যাংকে চাকরি কমে গেছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগ বন্ধ। চাকরি কোথায়?’

রাহুল এই মন্তব্যকেই লুফে নিয়েছেন। টুইট করে বলেছেন, ‘দারুণ বলেছেন গড়কড়িজি। গোটা দেশেই এই প্রশ্ন, চাকরি কোথায়?’Eprothomalo

লোকসভা ভোটের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, ক্ষমতায় এলে বছরে ২ কোটি মানুষকে চাকরি দেবেন। ক্ষমতায় আসার ৪ বছর পর বলেছেন, তেলেভাজার দোকান দিয়ে দিনে ২০০ টাকা আয়ও রোজগার। ২ কোটি তো দূরের কথা, ৪ বছরে ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের হিসাবও সরকার দিতে পারেনি।

গড়কড়ির এই মন্তব্য যদি রাহুলের অস্ত্র হয়ে থাকে, তা হলে সংসদে সরকারের দেওয়া উত্তর আরও মারাত্মক হাতিয়ার। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাংসদদের প্রশ্নের উত্তরে সরকারের পক্ষ থেকে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, সেই হিসাবে দেশের কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরে মোট ২৩ লাখ ৮০ হাজার পদ খালি রয়েছে। কোনো নিয়োগ হয়নি। এর মধ্যে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে ১০ লাখ ১০ হাজার, পুলিশে ৫ লাখ ৪০ হাজার, রেলওয়েতে ২ লাখ ৪০ হাজার, অঙ্গনবাড়ি কর্মী ২ লাখ ২০ হাজার। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খালি রয়েছে দেড় লাখ পদ, সেনাবাহিনীতে ৬২ হাজার, আধা সামরিক বাহিনীতে সাড়ে ৬১ হাজার, পোস্ট অফিসে ৫৪ হাজারের বেশি, অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসে প্রায় ২২ হাজার, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১২ হাজার এবং আদালতে খালি রয়েছে প্রায় ৬ হাজার পদ।

সংসদে দেওয়া সরকারের এই উত্তরের পিঠাপিঠি নিতিন গড়কড়ির মন্তব্য বিজেপির কাছে হয়ে দাঁড়িয়েছে বোঝার ওপর শাকের আঁটি। কটাক্ষের পাশাপাশি রাহুল এই তথ্যকেই হাতিয়ার করে বিজেপিবিরোধী আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। মঙ্গলবার সংসদীয় দলের বৈঠকে বলেছেন, ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৮ সালের এপ্রিল পর্যন্ত কর্মহীনতার হার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ‘সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি’-র দেওয়া তথ্যের উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ২০১৭ সালের জুলাইয়ে দেশে বেকারত্বের হার যেখানে ছিল ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে তা বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ। রাহুলের কথায়, এই হার আরও বাড়ার ইঙ্গিত রয়েছে।

এই ‘দুরবস্থার’ জন্য রাহুল দায়ী করেছেন মোদি সরকারের ভুল অর্থনীতি, দুর্নীতি, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় গাফিলতি এবং অবশ্যই তড়িঘড়ি জিএসটি চালু করা। দুর্নীতির জন্য সরাসরি অভিযুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। প্রচারের তালিকায় রাফায়েল কেলেঙ্কারি ও কাছের শিল্পপতিদের ব্যাংক লুটকে তিনি রেখেছেন। আর তুলে ধরেছেন নারী, শিশু, দলিত ও সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার। সংসদীয় দলের বৈঠকে তিনি প্রচারের অভিমুখ ঠিক করে দিলেন। সেই কাজে অজান্তেই তাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন নিতিন গড়কড়ি।

অবশ্য বিজেপির অন্দরমহলে প্রশ্ন, কর্মসংস্থান নিয়ে গড়কড়ির এই মন্তব্য নিতান্তই আলটপকা নাকি এর পেছনে দলীয় রাজনীতির অন্য কোনো সমীকরণ কাজ করছে? প্রশ্নটা উঠছে, কারণ, আগামী নির্বাচনে বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদির গ্রহণযোগ্যতা শরিকদের কাছে কমে যাবে বলে একটা প্রচার ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। মোদির বিকল্প হিসেবে শরিকদের মুখে যাঁদের নাম বেশি চর্চিত, তাঁদের একজন নিতিন গড়কড়ি, অন্যজন রাজনাথ সিং।

No comments

Theme images by Petrovich9. Powered by Blogger.